কিডনি রোগীদের জন্য সেরা ব্যায়াম ২০২৩

বর্তমান বিশ্বে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। এটি অনুমান করা হয় যে ভারতে ৭৫ লাখেরও বেশি রোগী দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (CKD) নিয়ে বসবাস করেন।

দেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২ লক্ষ নতুন রোগীর শেষ পর্যায়ে কিডনি ব্যর্থ হয়। এটি একটি বড় সংখ্যা এবং এই ব্যক্তিরা যদি একটি উপযুক্ত জীবনধারা বজায় না রাখেন তবে শীঘ্রই তারা বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ, দুর্বলতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, হৃদরোগ ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হবেন। পাশাপাশি পা ফুলে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে।

বিস্তাতির পড়ুন: কার্ডিও ব্যায়াম কি এবং কত প্রকার ও কি কি?

কেন কিডনি রোগীর ব্যায়াম করা দরকার?

আমাদের প্রতিদিন ব্যায়াম করা দরকার কারন ব্যায়ামের মাদ্ধমে শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, ডিমেনশিয়া, এবং বিষণ্নতার মতো দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ায় ঝুঁকি থেকে বেচে থাকা যায়।

ব্যায়াম হচ্ছে একপ্রকার ঔষধ। স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধের পাশাপাশি, ব্যায়াম উপরে তালিকাভুক্ত অনেক রোগের চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ব্যায়াম কিডনি রোগীর জন্যও উপকারী একটি প্রক্রিয়া। ব্যায়াম সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারী। এটি মানুষকে করে শক্তিশালী এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

আপনি যদি নিজেকে রোগমুক্ত ঝুঁকি মুক্ত রাখতে চান তাহলে অবশ্যই ব্যায়াম করুন। আর এ ব্যয়াম আপনাকে একটি সুন্দর জীবন পরিচালনা করতে সাহায্য করবে।

কিডনি রোগীদের জন্য ব্যায়াম

১. হাঁটা

এটি একটি খুব নিরাপদ ব্যায়াম এবং প্রায় সবার জন্য উপযুক্ত। এটা যে কোন জায়গায় এবং যে কোন সময় করা যেতে পারে। যারা একেবারেই ব্যায়াম করেন না, তারা যেন প্রথমে অল্প কয় মিনিটের হাঁটা দিয়ে শুরু করেন – খুব ধীর, খুব শান্ত। তারপরে এটি ১০ মিনিট করে বাড়িয়ে দিন।

শরীরের দিকে নজর রাখুন এবং স্ট্রেস বা অস্বস্তির কোনো লক্ষণ আছে কিনা দেখুন। যদি সস্থি ফিল করেন,এবং সবকিছু ঠিক-ঠাক থাকলে ধীরে ধীরে হাঁটার সময়কাল বাড়ান।

২. যোগব্যায়াম

আমরা জানি যে, যোগ ব্যায়ামে সঠিক অঙ্গভঙ্গি, রিলাক্সেশন, মেডিটেশন এবং শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম ক্রমান্বয়ে সংযুক্ত থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশলগুলি এ ব্যায়ামের একটি অপরিহার্য অংশ। মেডিটেশন এবং যোগাসন মনকে চাপ ও উত্তেজনা মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

৩. সাঁতার কাটা

এটা প্রত্যেকের জন্য ব্যায়ামের একটি চমৎকার ফর্ম। যেহেতু জলে জয়েন্টগুলিতে চাপ কম থাকে, তাই সাঁতারের সময় জয়েন্টগুলিকে অতিরিক্ত চাপের মুখোমুখি না করে শরীরের ব্যায়াম করার এটি একটি দুর্দান্ত উপায়।

ব্যায়ামের সাথে আপনি সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাবেন। ব্যায়াম শুধুমাত্র ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবে না, বরং সমস্ত রক্তের প্যারামিটারের ভারসাম্য বজায় রাখবে। যার ফলে দীর্ঘায়ু বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি সুস্থ বোধ করবেন।

.কিডনি রোগীদের ব্যায়াম সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর

ব্যায়াম কিভাবে উপকার করে?

ব্যায়ামের মাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো সহজ হয়ে যায়, প্রয়োজনীয় কাজগুলি সহজে করা যায়। আপনার অন্যান্য সকল কাজ উপভোগ করতে পারবেন ও কিছু শক্তি অবশিষ্ট রাখতে পারবেন শারীরিক ভাবে পিট থাকার জন্য।
বিস্তাতির পড়ুন: ব্যায়ামের ২০টি উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা

আপনার কখন ব্যায়াম করা উচিত?

আপনার স্বাভাবিক দিনের মধ্যে ব্যায়াম শিডিউল সেট করার চেষ্টা করুন। কখন ব্যায়াম করতে হবে সে সম্পর্কে এখানে কিছু ধারণা রয়েছে যেমন:
– বড় খাবারের পর এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
– দিনের বেলায় খুব গরম পড়লে ঐসময় এড়িয়ে চলুন।
– সকাল বা সন্ধ্যা ব্যায়াম করার জন্য সেরা সময়।

বিস্তাতির পড়ুন: ব্যায়াম করার উপযুক্ত সময় কোনটি?

কখন ব্যায়াম বন্ধ করা উচিত?

– খুব ক্লান্ত লাগলে।
– শ্বাসকষ্ট হলে।
– বুকে ব্যথা অনুভব করলে।
– যদি আপনি অনিয়মিত বা দ্রুত হৃদস্পন্দন অনুভব করেন।
– যদি পেটে অসুস্থ বোধ করেন
– পায়ে ব্যথা অনুভব হলে।
– যদি মাথা ঘোরা বা হালকা মাথা ব্যাথা অনুভব করেন।

বিস্তাতির পড়ুন: ব্যায়ামের সময় আমরা যে ২৩টি ভুল করি

কখন ব্যায়াম করা উচিত নয়?

ডাক্তারের সাথে কথা না বলে ব্যায়াম করা উচিত নয়, যদি নিম্নলিখিতগুলির মধ্যে কোনটি ঘটে, যেমন:
– জ্বর হলে।
– ডায়ালাইসিসের সময়সূচী পরিবর্তন করেছেন।
– ওষুধের সময়সূচী পরিবর্তন করেছেন।
– শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে
– খুব বেশি খেয়ে ফেলেছেন।
– আবহাওয়া খুব গরম এবং আর্দ্র, যদি না আপনি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় ব্যায়াম করেন।
– জয়েন্ট বা হাড়ের সমস্যা আছে যা ব্যায়ামের সাথে আরও খারাপ হয়ে যায়।

আপনি যদি এই কারণে ব্যায়াম করা বন্ধ করে দেন, তাহলে আবার শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে।

বিস্তাতির পড়ুন: ব্যায়ামকে আরও উপভোগ্য করার ১৬টি উপায়

শেয়ার করুন:

You May Also Like